বন্যার পানি বৃদ্ধির সাথে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হল নৌকা। আর তাই সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের প্রসিদ্ধ নওগাঁ নৌকার হাটে নানা আকারের নৌকাও সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিক্রির জন্য। পানি বাড়ায় নৌকার চাহিদা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন নৌকার কারিগরেরা।

প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বসে নওগাঁ হাট। নওগাঁ জিন্দানী কলেজ সংলগ্ন ফাঁকা এলাকায় বসে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই হাট।
এই হাটে কি নেই? গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগী, প্রস্তুতকৃত চেয়ার, টেবিল, চৌকি, আসবাবপত্র সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য, ধান, গম, ভুট্রা, পাট, কাঁচা শাক সবজি এবং নৌকার হাট।

সকাল থেকে শুরু করে নৌকা বেচা-কেনা চলে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত। এছাড়া, সেখানে স্থানীয় বাজার থাকায় হাটবার বাদেও প্রতিদিনই নৌকা বেচা-কেনা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতাই বেশি। বেচা-কেনা কম হলেও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাটে ছিল ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি। অনেকই কিনছেন কেউ বা ঘুরে ঘুরে নৌকা দেখছেন, দরদামও করছেন।

বলেন, ‘এ হাটে মূলত ডিঙি নৌকা বেচা-কেনা হয়। আকারভেদে পাঁচ হাজার থেকে আট হাজার টাকা পর্যন্ত একেকটি ডিঙি নৌকা বিক্রি হয়।
তিনি আরো জানান, সাধারণত মেহগনি, কড়ই, আম, চাম্বল, রেন্ট্রি কড়ই গাছের কাঠ দিয়ে নৌকা তৈরি করা হয়।’

একই এলাকার মহাদেব সুত্রধর বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদারা নৌকা তৈরি করে এই হাটে বিক্রি করত, আমরাও তাই করছি। কয়েকদিন আগে চলনবিল সহ আশেপাশের সকল নদ- নদীতে পানি বাড়ছে এ কারনে নৌকার চাহিদাও বেড়েছে ।

আবার সারা বছরই পুকুরে খাদ্য দেয়ার কাজে নৌকার ব্যাবহার হয়। কিন্ত সেটা ক্রমশই কমে যাচ্ছে কেননা কাঠের নৌকার বদলে প্লাষ্টিকের ড্রাম কেটে অনেকেই সেটাকে নৌকার বিকল্প হিসেবে ব্যাবহার করে থাকেন। নৌকা কিনতে আসা ফজলু রহমান বলেন, ‘আজ নৌকার দাম একটু বেশী।

গত হাটে যে নৌকা চার হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আজ সেই আকারের নৌকা বিক্রি হয়েছে পাঁচ হাজার টাকায়। একটু বেশী দামেই বিক্রি হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘এ হাটে খাজনা বেশি। শতকরা পাঁচ টাকা। একটি নৌকা পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে কিনলে খাজনা দিতে হয় ২৫০ টাকা। এটা কমানো দরকার।’

তবে, নওগাঁ হাটের ইজারাদার বলেন, জেলার অন্য হাটের তুলনায় এই হাটে খাজনা কম। এমনিতেই নৌকার বিক্রি অনেক বেড়ে গেছে , তাই খাজনা কমানো সম্ভব নয়। আর উচ্চ মুল্যে হাটের ইজারাও নিতে হয়।